হঠাৎ রাত ২টার দিকে খেয়াল করলাম নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, দুনিয়াটা পুরো কালো রঙে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। খেয়াল করলাম শরীর প্রচন্ড রকমে কাঁপুনি শুরু করে দিয়েছে। কিছুক্ষন শুয়ে ছিলাম, ভাবলাম ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু না। পরিস্থিতি প্রতিকূলে যাওয়া শুরু করলে আমি দৌড়ে আম্মু আব্বুর রুমে চলে যায়। উনারাও টেনশনে পড়ে গেলো। একটু আগেই ঠিক ঠাক ভাবে ঘুমাতে যাওয়া ছেলের এই অবস্থা কিভাবে হয়ে গেলো। তড়িঘড়ি করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল এ নিয়ে গেলো আমার আব্বু আর আব্বুর মামা। তখনো অবস্থা খারাপ। প্রথমে একজন প্রেশার চ্যাক করলো। রিপোর্ট করে দিলো প্রেশার নট রিডেবল। এটা নিয়ে পাঠালো দুতলায়। ওখানে গিয়ে কিছুক্ষণ রাখল। এর পর ইসিজি টেস্ট নিলো। রিপোর্ট ডাক্তার কে দেখালে সে বলে নিচে গিয়ে ব্লাড টেস্ট করিয়ে আনতে। তারপর আবার নিচে গেলাম, ব্লাড টেস্ট করালাম, অল্মোস্ট ২ ঘন্টা পর রিপোর্ট আসলো। এর পর রিপোর্ট দেখে ডাক্তার কিছু ওষুধ দিলো। খাওয়ার পর মোটামুটি স্টেবল অবস্থাতে এসে গেছি, আলহামদুলিল্লাহ।
চট্টগ্রাম মেডিকেলে ছিলাম হয়তো ৩/৪ঘন্টা। লাইফে অনেক বার গিয়েছিলাম ওই জায়গাতে বিভিন্ন কারণে। তবে এবারের এক্সপেরিয়েন্স ছিলো অন্য রকম। প্রথমে ইসিজি রুম টাতে মেশিনারি সাউন্ড গুলো খুবই জঘন্য। তার উপর রোগীদের বেঁচে থাকার আকুলতা, আত্মচিৎকার। সব গুলো মিলেই কি ভয়ংকর মুহুর্ত ছিলো। এর পর ২ ঘন্টা যে ওয়ার্ডে ওয়েট করছিলাম ওই জায়গাটা ওয়াশরুম এর পাশেই ছিলো। তাই রোগিরা একটু পর পর আসছিলো। এক একজন এক এক রকম। একজন ৬০উর্ব্ধ মানুষ নিঃশ্বাস নিতে পারছিলো না। খুব কষ্ট করে যতটুকু পারছে আল্লাহর নিয়াম গ্রহণ করতে লাগল। তিনি হাটা চলা করতে পারছেন না তবুও আসতে হলো কষ্ট করে। এর পর আরো অনেকে এলো অনেক রকম রোগব্যাধি নিয়ে। ২জন রোগিতো মারাই গেলো। তাদের পরিবারগুলো অসহায় মাখা চেহারা আর প্রিয়জন হারানোর আর্তনাদ এখনো চোখে ভেসে আসছে। পরক্ষনে ভাবলাম, আল্লাহ আমাকে অনেক ভালো রেখেছে এখনো, শুকরিয়া আদায় করতে ভুল্লাম না।
আমরা দুনিয়াতে ঠিক ততক্ষনই থাকব যতক্ষন আমাদের খোদাতা'আলা আমাদের জন্য সেট করে রেখেছে। এর বাইরে এক সেকেন্ড বেশি সময়ও আমরা থাকতে পারব না। সব কিছুই উপর থেকে সেট করা। জন্মের সময় আমাদের দুই কাধেঁ দুইজন ফেরেস্তাকে নিয়োগ দিয়ে দেওয়া হয়। তারা আমাদের প্রতিমুহূর্তের ভালো মন্দ সব কাজের রেকর্ড করা নিয়ে ব্যাস্ত থাকে। আল্লাহর নির্দেশনার বাইরে আমরা যা অদ্ভুদ/ উদ্ভট/অসুস্থ মানসিকতার কাজ করে থাকি তা শয়তানের পাল্লাতে পরেই করে থাকি। এবং এইসব কাজ রেকর্ড হতে থাকে। মানুষের বড় ইনফ্লুয়েন্সার হলো শয়তান। সে খুব সহজে মানুষকে ইনফ্লুয়েন্স করে ফেলতে পারে খারাপ কাজের দিকে। এটা বললাম কারণ ২দিন ধরে দেখছি মানুষ একটা ওয়ার্ড "ট্রান্সজেন্ডার" নিয়ে বেশি আলোচনা সমালোচনা করছে। ক্লাস সেভেন এর বইয়ে ডিরেক্টলি না লিখলেও ইন্ডিরেক্টলি এটা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। অনেকেই দেখলাম এটার পক্ষে কথাও বলছে। হরমোনাল প্রব্লেম বলে চালায় দিচ্ছে। এই জায়গাটাতেই আমার সমস্যা। হরমোনাল প্রবলেম মানে কি ভাই? এটাও তো একটা রোগ। রোগের চিকিৎসা না করিয়ে আয়নার সামনে গিয়ে মেয়েদের অভয়ব করে নিজেকে মেয়ে বলে দাবি করাটাও একটা রোগ। মানসিক রোগ। হরমনাল প্রব্লেম হলে সেটাও রোগ। যন্ত্রপাতি না কেটে ভালো ডাক্তার দেখান। চিকিৎসা নেন। হাসির পাত্র হয়ে লাভ নাই। দুনিয়াটারে ন্যাচারালি চলতে দেন। শয়তানের পাল্লায় পরে প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করলে প্রকৃতি নিজেই আপনারে খেলে দিবে দুইদিন পর। খালি ট্রান্স ট্রান্স করে লাফাইলে তো আর জেন্ডারে নতুন একটা ভ্যালু এড করতে পারব না আমরা। খাতা কলমে উঠলেও প্রকৃতিতে তো উঠবে না।
আবার অনেকেই হিজড়া সম্প্রদায়কে উদাহরণ সরুপ টানছে। হিজড়া আর ট্রান্সজেন্ডারের মধ্যে ফারাক অনেক। হিজড়া জন্ম থেকেই হিজড়া। উনাদের জন্ম হয় এভাবেই। ১৫-২০ বছর ছেলে থাকার পর হঠাৎ মনে হলো আমার জিনিসপাতি রাখার দরকার নাই বা নতুন জিনিসপাতি দরকার এমন মানুষ হিজড়ারা না।
ভালো থাকবেন, সুস্থ মানসিকতা নিয়ে বেঁচে থাকবেন। সব কিছুর জন্য তার কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন। ধন্যবাদ।